Dr. K M Rafiqul Islam Shetu
কারণ- প্রধান কারণগুলোর মধ্যেঃ
১। ঘাড়ের হাড় ক্ষয় হওয়া (Spondylosis) বা বেড়ে যাওয়া (C.Rib)
২। ঘাড়ের মাংসে টান লাগা।
৩। ঘাড়ে আঘাত পাওয়া।
৪। বাতের সমস্যা যেমন (Ankylosing Spondylitis বা Rheumatoid Arthiritis)
৫। ঘাড়ের লিগামেন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া (OPLL)
৬। ডিক্স প্রলাপস।
৭। টেনশন।
৮। ব্লাড প্রেশার বেশি বেড়ে গেলে।

করনীয়-
১। নরম পাতলা বালিশ ব্যবহার করা।
২। ব্লাড প্রেসার মনিটর করা ।
৩। মালিশ বা ম্যাসাজ না করা।
৪। রোজ ২ বেলা গরম পানির ব্যাগ দিয়ে ৩০ মিনিট করে স্যাক দেওয়া।
৫। ঘাড় ঝুঁকিয়ে বেশি কাজ না করা।

এরপরও যদি ব্যথা থাকে তাহলে X-Ray Cervical Spine (Both View) করে একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করবেন।
কারণ- প্রধান কারণগুলোর মধ্যেঃ
১। দীর্ঘক্ষণ বসে / দাঁড়িয়ে কাজ করা।
২। আঘাত পাওয়া।
৩। ভারী ওজন তোলা।
৪। হাড় ক্ষয় হওয়া।
৫। বাতজনিত কারণ যেমন
     (Ankylosing Spondilytis বা Rheumatoid Arthritis)
৬। মেরুদণ্ডের ডিক্স প্রলাপস।

করনীয়-
১। একসাথে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ না করা।
২। ভারী ওজন না তোলা।
৩। ঝুঁকে ঘর/দুয়ার ঝাড়ু না দেওয়া।
৪। চাপ কলে চাপ না দেওয়া।
৫। মালিশ বা ম্যাসাজ না করা।
৬। শক্ত বিছানায় শোয়া।
৭। রোজ ২ বেলা ৩০ মিনিট করে হালকা গরম স্যাক দেওয়া (হটওয়াটার ব্যাগ দিয়ে)।
৮। ঝাঁকিযুক্ত রাস্তায় গাড়ি / মোটর সাইকেলে না চড়া।
৯। পিড়িতে বসে রান্না / তরকারি না কাটা।
১০। শরীরের ওজন কমানো।

এতো কিছুর পরেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে ব্যথার কারণ নির্ণয় এবং এর প্রতিকারের জন্য একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের সাথে দেখা করবেন।
কারণ- প্রধান কারণগুলোর মধ্যেঃ
১। হাঁটুতে আঘাত পেলে।
২। হাঁটুর ভেতরের হাড় ক্ষয় হলে।
৩। বাত যেমন - RA, Gouty Artritis।
৪। ইনফেকশন হলে।
৫। লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে।

করনীয়-
১। হাঁটু ভাঁজ করে কাজ না করা।
২। হাই কমোড / চেয়ার কমোডে টয়লেট করা।
৩। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা কম করা।
৪। শরীরের ওজন কমানো।
৫। মালিশ বা ম্যাসাজ না করা।
৬। রোজ ২ বেলা ৩০ মিনিট করে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে হালকা গরম স্যাক দেওয়া।

এরপরও যদি ব্যথা না কমে তাহলে রোগের কারণ নির্ণয় এবং সু-চিকিৎসার জন্য একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করবেন।
উপসর্গ-
১। পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা।
২। সকালে প্রথম পা ফেলতে বেশী ব্যথা করা।
৩। অনেকক্ষণ বসে থাকার পর আবার হাঁটা শুরু করলে ব্যথা হয়।
৪। কিছুক্ষণ হাঁটার পর ব্যথা কমে যায়।
৫। গোড়ালির ভেতরের দিকে আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।

করনীয়-
১। খালি পায়ে না হাঁটা।
২। ঘরে Bata আলট্রাসফট স্যান্ডেল ব্যবহার করা।
৩। বাহিরে নরম জুতা ব্যবহার করা।
৪। পুরুষদের ক্ষেত্রে নরম কেড্স আর তা না হলে “সু” ভিতরে সিলিকনের হিলকুসন ব্যবহার করা।
৫। রোজ ২ বেলা ৩০ মিনিট করে কুসুম গরম পানিতে পা ডুবিয়ে হালকা গরম স্যাঁক দেওয়া।

এরপরও যদি না কমে তাহলে একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
কারণ-
১। আঘাত পেলে।
২। হাতের বেশী ব্যবহার।
বিশেষ করে * ঘর গৃহস্তালির কাজ বেশি করা *টেনিস প্লেয়ার *ভলিবল প্লেয়ার *ড্রাইভার

করনীয়-
১। হাতের ব্যবহার কমানো।
২। ভারী জিনিস না তোলা।
৩। মোচড়ানো কাজ না করা।
৪। কাপর চিপড়ানো ও রুটি বেলা নিষেধ।
৫। গরম স্যাঁক দেওয়া।
৬। টেনিস এলবো স্প্রিন্ট ব্যবহার করা।
কারণ-
১। বয়স বেশী বা বার্ধক্য জনিত কারণে।
২। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকলে।
৩। শরীরের কোন অংশ প্যারালাইসিস থাকলে।
৪। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কম খেলে।
৫। স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ খেলে।
৬। হরমোনাল সমস্যা থাকলে।

করনীয়-
১। প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশী খাওয়া।
২। নিয়মিত ব্যায়াম করা।
৩। ঔষধ যেমনঃ ক্যালসিয়াম, ভিটামিন D3, বিসফসফোনেট সেবন করা।
কারণ-
১। উচ্চ রক্তচাপ।
২। এলকোহল সেবন।
৩। ওজন বেশী হলে।
৪। ডাল বা ডাল জাতীয় খাবার বেশী খেলে।
৫। ডায়ইউরেটিক জাতীয় ঔষধ সেবন করলে।

করনীয়-
১। ইনডোমেথাসিন 75mg রোজ ২ বার ভরাপেটে সাথে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ খাবে।
২। এর সাথে কোলচিসিন গ্রুপের ঔষধ খেতে পারে।
৩। এবং পরবর্তীতে না হওয়ার জন্য অ্যালুপিউরিনল/ফ্যাবুক্রস্টেট জাতীয় ঔষধ খাবে।
স্লিপ ডিস্ক কি

স্লিপ ডিস্ক হল মেরুদণ্ডের হাড়গুলির মাঝের টিস্যুর নরম গদিগুলির নিজের জায়গা থেকে সরে যাওয়া। এই অবস্থায় স্নায়ুর উপরে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়। এই অবস্থায় ডিস্কের কেন্দ্রে অবস্থিত জেলির মতন অংশটি ডিস্ক থেকে ঠেলে বেড়িয়ে এসে মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ দেয়। সাধারণত স্লিপ ডিস্ক হয় মেরুদণ্ডের নিচের অংশে (লাম্বার স্পাইন)। সাধারণত 30-50 বছর বয়সীদের স্লিপ ডিস্ক হয় এবং এর ফলে তীব্র ব্যথা হয়।

স্লিপ ডিস্ক এর উপসর্গ

মেরুদণ্ডের লাম্বার অংশের (পিঠের নিচের দিক) স্লিপ ডিস্কের সাধারণ উপসর্গগুলি হচ্ছে:

• কোমড়ে ব্যথা।
• ব্যথা কোমড় থেকে পেছন দিয়ে পায়ের পাতা পর্যন্ত যায়।
• শরীর বাঁকানোর সময়ে তীব্র ব্যথা।
• বসার সময় অথবা কোনও নড়া-চড়ার সময় হঠাৎ ব্যথা।
• একটি পা বা একটি হাতে অসাড়তা।
• পায়ে দুর্বলতা।
• নিতম্বের এলাকায় ব্যথা।
• হাঁচি কাশির সাথে ব্যথা বেড়ে যায়।

যদি স্লিপ ডিস্কের অবস্থান মেরুদণ্ডের সারভাইকাল এলাকায় হয়, তাহলে ঘাড়ে এবং হাতে ব্যথা অনুভব হবে। উপসর্গগুলি এই রকমের হতে পারে:

• ঘাড় অস্পষ্ট অস্বস্তি।
• ঘাড় সরানোর সময় ব্যথা।
• ঘাড়ের গোড়ায় তীব্র ব্যথা।
• কাঁধে ব্যথা।
• হাত বেয়ে ব্যথার আঙুলের দিকে নামা।
• ঘাড়, কাঁধ বা হাতে অসাড়তা।
• ঘাড়ে ব্যথা এবং একই সাথে আঙুলে রিন রিন অনুভব।

স্লিপ ডিস্ক এর চিকিৎসা

স্লিপ ডিস্কের ব্যবস্থাপনার অন্তর্গত হল:

বিনা অস্ত্রোপচারে চিকিৎসা

• বিছানায় বিশ্রাম
৩ দিন পর্যন্ত বিশ্রাম নিলে উপকার পাওয়া যায় কারণ এই সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলি নিরাময় হতে পারে।

• ব্যথার ওষুধ
ননস্টেরয়ডাল এন্টি-ইনফ্লামেটরি ওষুধগুলির (এন-এস-এ-আই-ডি'স) অন্তর্গত হল বেদনা-নাশক ওষুধগুলি যেমন ইবুপ্রোফেন এবং নাপ্রক্সেন, যেগুলি ব্যথা থেকে আরাম দেয়।

• ফিজিয়োথেরাপি
যেমন Traction, SWD, IRR, UST, TENS, ও পেশী শক্তিশালি করার ব্যায়াম।

• এপিডুরাল ইনজেকশান
এপিডুরাল স্টেরয়েড ইনজেকশান দিলে প্রদাহ থেকে অল্প সময়ের জন্য আরাম পাওয়া যায়।

• অন্যান্য ওষুধগুলি
এর অন্তর্গত হচ্ছে পেশী শিথিল-কারী এবং খিঁচুনি-রোধী ওষুধগুলি যা পেশীর খিঁচুনি বন্ধ করে।

শল্য চিকিৎসা

শল্য চিকিৎসার অন্তর্গত হল:

• মাইক্রোডিসেক্টমি

• কৃত্রিম ডিস্ক প্রতিস্থাপন

জীবনযাত্রার ব্যবস্থাপনা

স্লিপ ডিস্ক চিকিৎসার অনেকগুলি বাড়িতেও করা যায়। এগুলি হল:

• দাঁড়ানো এবং বসার ভঙ্গি সঠিক হতে হবে। এতে পিঠের উপরে চাপ কম পড়বে। সব চেয়ে সাধারণ এবং সাহায্যকারী উপদেশ হচ্ছে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন এবং দাঁড়ান।
• ওজন তুলবার সময়ে হাঁটু এবং নিতম্ব ভাঁজ করুন কিন্তু পিঠ সোজা থাকবে।
• কোনও কিছু বয়ে নিয়ে যেতে হলে বস্তুটিকে শরীরের কাছাকাছি রাখুন। এতে মেরুদণ্ডের উপরে চাপ কম পড়বে।
• স্লিপ ডিস্কের চিকিৎসা চলাকালীন উঁচু হিলের জুতো বা অন্য কোনও রকমের জুতো যা আপনার পিঠে চাপ দেয়, তা পড়বেন না।
• উপুড় হয়ে ঘুমাবেন না।
• অনেকক্ষণ ধরে একটানা বসে থাকবেন না।
• হাঁটাচলার সুবিধার জন্য এবং চাপ ও পিঠের ব্যথা কমানোর জন্য ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী দেহ শিথিল করার ব্যায়াম করুন।
• যোগাভ্যাস করলে পেটের পেশীগুলি শক্তিশালী হয়, ফলে এই পেশীগুলি পিঠের পেশীগুলির সহায়তা করে পারে।

বহু সংখ্যক মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত স্লিপ ডিস্ক বিশ্রাম এবং যত্ন পেলে সময়ের সাথে সাথে সেরে যায়। সাথে সাথে সাবধানে থাকতে হবে যাতে ভবিষ্যতে আবার স্লিপ ডিস্ক না হয়।

ফাইব্রোমায়ালজিয়া কি?

ফাইব্রোমায়ালজিয়া একটি যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা, যার ফলে শরীরের সমস্ত পেশী আক্রান্ত হয়। এটি মহিলাদের মধ্যেই সাধারণত লক্ষ্য করা যায়; পুরুষদের তুলনায় প্রায় ৩-৭ গুন্ বেশি।

এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কি?

যেসব উপসর্গগুলি বেশিরভাগ হয়, সেগুলি হলো :

• যন্ত্রণা, সারা শরীরে ব্যথাভাব এবং শরীর আড়ষ্ঠ (শরীরকে নড়ানো বা বাঁকা করা যায় না) হয়ে যায়, বিশেষ করে নির্দিষ্ট কিছু জায়গাতে
• আলস্য ভাব
• ভালো করে ঘুমোতে না পারা
• প্রচণ্ড মাথাব্যথা বা যন্ত্রণা
• প্রচণ্ড মাসিকের ব্যথা
• হাত পা অসাড় হয়ে যাওয়া এবং ঝিঁঝিঁ ভাব
• স্মৃতিশক্তির সমস্যা
• বিষন্ন বোধ করা বা ডিপ্রেশনে চলে যাওয়া

এর প্রধান কারণগুলি কি?

এই অবস্থার প্রধান কারণগুলি হলো:

• হরমোন পরিবর্তন
• মানসিক চাপের ভিন্ন মাত্রা
• জলবায়ু পরিবর্তন

এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

এই রোগ নির্ণয়ের জন্য বিস্তারিত চিকিৎসা ইতিহাসের তথ্য নেওয়া হয়, রোগীকে জিজ্ঞাসা করা হতে পারে, অবস্থা কতটা গুরুতর, যন্ত্রণার স্থানগুলি, কি থেকে হচ্ছে এবং আরও অন্যান্য ব্যাপার। উপসর্গগুলি বেশিরভাগ সময় এই অবস্থার একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরে। ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সাধারণত দরকার হয় না ,যদি না শরীরের ব্যথা বা অলস ভাব অন্য কোনও কারণে হয়ে থাকে। এই অবস্থা বোঝার জন্য রোগীর অনেক বছর সময় লেগে যেতে পারে।

সাধারণত, চিকিৎসার মধ্যে ওষুধ এবং ওষুধ ছাড়া অন্যান্য পদ্ধতির মিশ্রণ রয়েছে:

• যন্ত্রণা বা ব্যথা কমানোর ওষুধ
• পেশী শক্তির জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করা
• ভালোভাবে ঘুমোনোর পদ্ধতি
• যোগব্যায়াম অথবা ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা
• কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপির মাধ্যমে বিষণ্ণতা বা উদ্বেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

নিজ যত্ন নেওয়ার টিপস:

• ব্যায়াম এবং নিজেকে বিভিন্ন শারীরিক কাজকর্মের মধ্যে ব্যস্ত রাখলে, তা এই রোগের উপসর্গগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
• নিজের যত্ন রাখার ক্লাস দৈনন্দিন কাজকর্মের মাধ্যমে দৈনন্দিন অসুবিধাগুলিকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।

pics
ফ্রোজেন শোল্ডার কি?

অ্যাডহেসিভ ক্যাপ্সুলাইটিস (ফ্রোজেন শোল্ডার) হল একটা অবস্থা যা কাঁধ শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যথা অথবা অস্বস্তির সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত ৪০-৭০ বছর বয়সে ঘটে এবং পুরুষের তুলনায় মহিলাদের প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

এর প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো কি কি?

এখানে তিনটি পর্যায় আছে যেটা ফ্রোজেন শোল্ডারকে চিহ্নিত করে:

• ফ্রিজিং পর্যায়/ব্যাথা
• ফ্রোজেন পর্যায়/মুভমেন্ট কমে যাওয়া
• থোয়িং পর্যায়/নিরাময়

বৈশিষ্ট্যসূচক উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে:

• দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা
• কাঁধ শক্ত হয়ে যাওয়া
• চুল আচড়ানো, জামা পরা ও খোলা, পিঠ চুলকানো কষ্টকর।
• অস্বস্তির কারণে কাঁধের মুভমেন্ট ব্যাহত হওয়া
• রাত্রে অসহ্য ব্যথা বা যন্ত্রণা

এর প্রধান কারণগুলি কি কি?

ফ্রোজেন শোল্ডারের কারণিক বিষয়গুলি জানা নেই। এটি সাধারণত উচ্চ ব্লাড সুগারের মাত্রা যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায়। এটি উচ্চ বা নিম্ন থাইরয়েড হরমোন স্তর, সাইকোমোটর অক্ষমতা, এবং কার্ডিয়াক (হৃদয়) ত্রুটিযুক্ত ব্যক্তিদেরও দেখা যেতে পারে। শয্যাশায়ী রোগীদের ফ্রজেন শোল্ডার হওয়ার ঝুঁকি খুবই বেশি থাকে।

চিকিৎসা:

নন-সার্জিকাল পদ্ধতিগুলি হল:

• ব্যথা এবং অস্বস্তি কমানোর জন্য NSAIDs Group এর ওষধ সাহায্য করতে পারে। এই ড্রাগের সাহায্যে প্রদাহজনক অবস্থাগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
• আরো ভালো ব্যথার মুক্তির জন্য স্টেরয়েড ইঞ্জেক্ট করা হতে পারে।
• গতির পরিধি উন্নত করতে ফিজিওথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।

অস্ত্রোপচারের পদ্ধতিগুলি:

• শোল্ডার আর্থ্রোস্কোপি।
• অ্যানেস্থিসিয়ার দ্বারা কাঁধকে নিপুণভাবে ঠিক করা।(MOA)

নিজের-যত্ন নেওয়ার পরামর্শ:

• মুখ্য চিকিৎসার কৌশল হল ব্যায়াম করা এবং শারীরিক থেরাপি করা।
• কাঁধের চাপ হ্রাস করার জন্য সবচেয়ে ভালো হল যে কোন ভারী জিনিস না তোলা বা এড়িয়ে চলা।
• ঔপসর্গিক উপশম প্রদান করতে সাধারণ ব্যথার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কি?

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (আরএ) একটা অবস্থা যাকে গাঁটে এবং গাঁটের চারপাশে প্রদাহ বা ফোলা, গাঁটে ব্যথা এবং অন্যান্য উপসর্গ দিয়ে ব্যখ্যা করা যায়। এটা একটা অটোইমিউন ব্যাধি যেখানে স্বাস্থ্যবান টিসুগুলোকে বিদেশী শরীর মনে করে তাদের আক্রমণ করে।

এর সাথে জড়িত প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো কি কি?

এই অবস্থার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নিচে বলা হলো:

• ভোরবেলায় আড়ষ্ঠতা যেটা পুরো দিন ক্রমাগত গাঁটের নড়াচড়ার ফলে কমে যায়।
• ক্লান্তি।
• অ্যানিমিয়া বা রক্ত কমে যাওয়া।
• বেদনাদায়ক গাঁট।
• শুকনো চোখ এবং মুখ।
• শক্ত মাংসপিন্ড কনুইতে, হাতে, হাঁটুতে এবং অন্যান্য গাঁটে।
• গাঁটে লালভাব এবং ফোলা।
• বুকে ব্যথা।
• জ্বর ও ওজন কমে যাওয়া।

এর প্রধান কারণগুলো কি কি?

যদিও এই অবস্থার পিছনে প্রকৃত কারণ এখোনো জানা যায় নি, নিচে উল্লেখিত কারণগুলোকে এই অবস্থার অগ্রদূত মনে করা হতে পারে:

• জিনের পরিবর্তন।
• বাবার বংশে কারোর এই ব্যাধি থাকা।
• সংক্রমণ।
• হরমোনের পরিবর্তন।
• মানসিক হতাশা।
• ধূমপান।
• প্রদূষকের সংস্পর্শে আসা।

এটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়?

উপরোক্ত উপসর্গ দেখে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। এছাড়াও, শারীরিক পরীক্ষা, এক্স-রে এবং রক্তপরীক্ষাও এই রোগের উপস্থিতি নিশ্চিত করে।

চিকিৎসা:

চিকিৎসা প্রী-এম্পটিভ এবং রিঅ্যাক্টিভ উভয় ভাবেই করা হয়, যেমন:

• ব্যথা কমানোর ওষুধ বা অ্যানালজেসিক ওষুধ।
• ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি-প্রদাহ ওষুধ যেমন আইবুপ্রোফেন।
• কর্টিকোস্টেরয়েডস্।
• ব্যাধির প্রকোপ কমাতে অ্যান্টি-রিউম্যাটিক ওষুধ যেমন মেথোট্রেক্সেট।
• বায়োলজিকাল ওষুধ যেমন, ইনফ্লিক্সিম্যাব।
• ব্যায়াম, যেমন শক্তির প্রশিক্ষণ এবং টাই চি।
• ফিজিওথেরাপী ব্যথা কমাতে এবং গাঁটে আবার গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে।
• উপকরণ যেগুলো ব্যথা এবং চাপে আরাম দেবে।
• বিশ্রাম।
• স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং খাদ্যতালিকায় ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত করা।
• মালিশ করা, আকুপাংচার এবং অন্য সম্পূরক চিকিৎসা।

স্পন্ডাইলোসিস কি?

স্পন্ডাইলোসিস একটা ব্যাধি যার কারণে হাড়ে এবং সাথে কোমলাস্থি এবং ডিস্কেও পরিবর্তন হয়। শেষপর্যন্ত স্পন্ডাইলোসিস ফলে মেরুদন্ড শক্ত হয়ে যায় বা অস্টিওআর্থ্রাইটিস হয়।

এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি কি?

স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি এর প্রকৃতির উপর নির্ভর করে:

লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস

• ভোরবেলায় পিঠে শক্তভাব ও পিঠে ব্যথা।
• অনেকক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা।
• ঝুঁকলে বা কিছু জিনিস তুললে ব্যথা।

সার্ভাইকাল স্পন্ডাইলোসিস

• মাথার পিছনদিকে মাথা ব্যথা।
• পায়ে ও বাহুতে দূর্বলতা ও অসাড়তা।
• ঘাড়ে শক্তভাব।
• ভারসাম্যের অভাব।
• ঘাড়ে ব্যথা যেটা কাঁধের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
• পায়ে বা কাঁধে অস্বাভাবিক অনুভুতি।
• প্রস্রাব ও পায়খানা নিয়ন্ত্রণে অসুবিধা।

থোরাসিক স্পন্ডাইলোসিস

• পিছনে ঝুঁকলে পিঠের মাঝখানে ব্যথার অনুভুতি।
• যখন মেরুদন্ড সামনে ও পিছনে নাড়ানো হয় তখন ব্যথা।

এর প্রধান কারণগুলো কি কি?

স্পন্ডাইলোসিসের প্রধান কারণগুলো হলো;

• বয়স বৃদ্ধি।
• অতীতে কোনো ঘাড়ে চোট, যেমন মোটর দূর্ঘটনায় আঘাত পাওয়া।
• প্রচন্ড আর্থ্রাইটিস।
• অতীতে মেরুদন্ডে আঘাত পাওয়া।

এটি কিভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?

নিম্নলিখিত উপায়ে স্পন্ডাইলোসিসের নির্ণয় করা হয়:

• বিশদ ইতিহাস এবং পিঠ ও ঘাড়ের নমনীয়তা দেখার জন্য শারীরীক পরীক্ষা।
• হাঁটা লক্ষ করা।
• পা, বাহু এবং হাতের শক্তি ও প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা।
• দরকার পড়লে এক্স-রে, এম আর আই বা সিটি স্ক্যান করা হয়।

নিম্নলিখিত উপায়ে স্পন্ডাইলোসিসের চিকিৎসা করা হয়:

• ব্যথা কমানোর জন্য দোকান থেকে কেনা ওষুধ।
• ব্রেস বা নরম কলার।
• আক্রান্ত অঞ্চলের পেশীর শক্তি বাড়াতে ব্যায়াম করা।
• শারীরিক থেরাপি।
• প্রচন্ড ব্যথাতে ইন্জেক্সন বা ব্যথা কমানোর ওষুধ।
• গুরুতর ক্ষেত্রে যেখানে ইন্জেক্সন বা ব্যথা কমানোর ওষুধ কোনো কাজ দেয় না বা দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম ব্যহত হয় সেখানে অস্ত্রোপচার করা হয়।